জাপান: অমিত সম্ভাবনার দেশ

জাপান: অমিত সম্ভাবনার দেশ

জাপানে মাইগ্রেশন নতুন কোন বিষয় নয়। প্রাচীনকাল হতে মানুষ জাপানে এসেছে, আবার দেশটি হতে অন্যান্য দেশেও মানুষ গিয়েছে। মাইগ্রেশন তাই জাপানের রাজনীতি, অর্থনীতি, সংস্কৃতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে সব কালে।

প্রাচীনকালে,  এশিয়ার পূর্ব অঞ্চলে অবস্থিত এই দেশ জাপানের মানুষ ব্যবসা-বাণিজ্য করতে যেত কোরিয়া, চীন এবং অন্যান্য এশীয় দেশে । রাজনৈতিক বা সামরিক কারণে অন্য দেশে যেতে বাধ্য হতো কিছু কিছু জাপানি।

অন্য দেশ হতে জাপানে অভিবাসন দেখা যেত প্রাচীনকালে। যদিও জাপান ছিল একটি বিচ্ছিন্ন দেশ, সময়ের সাথে সাথে ব্যবসা বাণিজ্য এবং সংস্কৃতির আদান-প্রদান শুরু হয় অন্য দেশের সাথে। ব্যবসার কাজে বা ধর্ম প্রচারের জন্যে কিছু বিদেশী জাপানে এসেছিলেন। ১৮শ শতাব্দীর পর হতে, ইউরোপের বিভিন্ন দেশ হতে কিছু মানুষ জাপানে এসেছিলেন, তবে তাদের মূল উদ্দেশ্য ছিল ব্যবসা-বাণিজ্য করা।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর যুদ্ধবিধ্বস্ত জাপান এক চরম সংকটকাল অতিক্রম করছিল। যুদ্ধের ধ্বংসস্তূপ থেকে দেশকে পুনর্গঠনের জন্য প্রয়োজন পড়ে বিপুল শ্রমশক্তির। অন্যদিকে, দক্ষিণ আমেরিকার দেশগুলো—বিশেষ করে ব্রাজিল ও পেরু—জাপানি অভিবাসীদের জন্য অর্থনৈতিকভাবে ততটা সম্ভাবনাময় ছিল না। এই বাস্তবতায় অনেকেই আবারো জাপানে ফিরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন, নতুনভাবে জীবন শুরু করার আশায়। এই অভিবাসীরা প্রধানত জাপানের শিল্প ও নির্মাণ খাতে কাজ করতে আসেন। তাদের পূর্ব অভিজ্ঞতা ও কর্মদক্ষতা জাপানের অর্থনৈতিক পুনরুত্থানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

আবার ১৯৮০-এর দশকে, যখন ব্রাজিল ও পেরুতে অর্থনৈতিক সঙ্কট চলছিল, তখন দেশ দুটিতে অবস্থানরত জাপানিরা সংগ্রাম করছিল ভালোভাবে বেঁচে থাকবার জন্য। এ পরিস্থিতিতে, ১৯৯০-এর দশকে, জাপানের সরকার দক্ষিণ আমেরিকান জাপানি বংশের লোকজনকে কাজের ভিসা দিতে শুরু করে। সেই সুযোগ গ্রহণ করে অনেক জাপানি—তারা ব্রাজিল, পেরু ছেড়ে তাদের আদিভূমি জাপানে এসে বসবাস করা ও কাজ করতে শুরু করে।  

বর্তমানে, জাপানের জনসংখ্যা ধীরে ধীরে কমে যাচ্ছে, এবং বয়স্ক মানুষের সংখ্যা বাড়ছে। এই কারণে, জাপানে বিদেশিদের প্রয়োজন। জাপানি সরকার অভিবাসন নীতি পরিবর্তন করে বিদেশি শ্রমিকদের, দক্ষ পেশাজীবীদের দেশটিতে কাজ করবার জন্য, বসবাস করতে উৎসাহিত করছে।

খুব সাধারণ একটি ধারণা অনেকের মাঝে—জাপান বাইরের দেশের লোকদেরকে নাগরিকত্ব দিতে চায় না। ভুল, পুরোপুরি ভুল। দেশটির আইন মন্ত্রনালয়ের সূত্রে জানা যায়, ২০২৪ সাল অব্দি জাপান ৬১০,২০৮ জনকে নাগরিকত্ব দিয়েছে  (www.nippon.com)। এটি ঠিক, নাগরিকত্ব পেলে একজন জাপানি হয়ে যায় না, জাপানের সমাজে তিনি সাধারণত বিবেচিত হয়ে থাকেন ‘অন্য জাতির একজন’ হিসেবে। অবশ্য, সুযোগ সুবিধা অধিকার যা কিছু একজন জাপানি পান, তিনিও তা পান। 

যারা পড়াশুনা কিংবা কাজের জন্য বাংলাদেশ হতে বাইরে যেতে চান, জাপান সব সময়ই একটি আকর্ষণীয় দেশ তাদের কাছে। লেখাপড়ার মান যেমন উন্নত, জীবনযাত্রার মানও সেভাবেই উন্নত। প্রযুক্তিতে সেরা জাপান, সকলেরই জানা। দেশটির বিখ্যাত সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পড়বার জন্য অনেক শিক্ষার্থীরই স্বপ্ন থাকে।

লেখাপড়া, চাকুরী,ব্যবসা কিংবা বসবাস—যে উদ্দেশ্যেই যাওয়া হোক না কেন, জাপানি ভাষা জানতেই হয় বেশির ভাগ ক্ষেত্রে। অল্প কয়েক ধরনের চাকুরী আছে—যেমন, কোন কোন ক্ষেত্রে আইটির চাকুরীতে, জাপানি ভাষা না জানলেও চলে। তাই, যারাই জাপানে যেতে  চান, তাদের উচিত হবে জাপানি ভাষা শেখা শুরু করা—হোক তা অনলাইনে, কিংবা সরাসরি কোন প্রতিষ্ঠান হতে। জাপানে যাবার পরে তাদের ভাষা শেখা শুরু করবার চাইতে, নিজের দেশ হতে ভাষা শিখে যাওয়াটা সব সময়ই বুদ্ধিমানের কাজ হবে—সময়, শ্রম, অর্থ বাঁচবে।  

নানা ধরনের ভিসার ব্যবস্থা আছে জাপানে যাবার জন্য। দেখা নেওয়া যাক সেসব:

ভ্রমণ ভিসা (Tourist visa): ট্যুরিস্টদের জন্য জাপান সাধারণত ১৫ দিন হতে ৯০ দিনের জন্য ভিসা দিয়ে থাকে। ৯০ দিনের বেশি থাকা যায় না এক ট্রিপে—হোক তা সিঙ্গল এন্ট্রি কিংবা মাল্টিপল এন্ট্রি।  ব্যক্তিগত সফর, ভ্রমণ, আত্নীয় স্বজনের সাথে দেখা করবার জন্য দেওয়া হয় এই ধরনের ভিসা। মাল্টিপল এন্ট্রি ভিসার মেয়াদ সাধারণত তিন বছরের জন্য হয়, তবে প্রতি ট্রিপে অনধিক ৯০ দিন অবস্থান করা যায়।

ওয়ার্ক ভিসা (Work Visa): পরিশ্রমী মানুষের দেশ জাপান। আলাদা আলাদা পেশার জন্য আলাদা আলাদা ভিসা রয়েছে। যেমন:
ক. প্রকৌশলী/বিশেষজ্ঞ/ আন্তর্জাতিক সেবা (Engineer/Specialist in Humanities/International Services): আইটি প্রফেশনাল, প্রকৌশলী, ইন্টারপ্রিটার, মার্কেটিয়ার, শিক্ষক, ডিজাইনার এই ক্যাটাগরিতে পড়েন। দশ বছরের সংশ্লিষ্ট কাজের অভিজ্ঞতা থাকতে হয়।
খ. অত্যন্ত দক্ষ প্রফেশনাল ভিসা (Highly Skilled Professional Visa): এ্যাকাডেমিক/পেশাগত উচ্চ যোগ্যতার অধিকারী (গবেষক, কর্পোরেট ম্যানেজার) ব্যক্তিবিশেষ  এই ভিসার জন্য আবেদন করতে পারেন।
ঘ. ইন্টারটেইনার ভিসা (Entertainer Visa): গানের শিল্পী, নাচ করেন যারা, অভিনেতা, প্রফেশনাল অ্যাথলেট  এই ভিসার জন্য আবেদন করতে পারেন।
ঙ. স্কিলড লেবার ভিসা (Skilled Labor Visa): জাপানি রন্ধনশৈলীতে দক্ষ শেফ, মিস্ত্রী, নির্মাণ শ্রমিক এই ধরণের ভিসার জন্য যোগ্য।  তিন হতে দশ বছরের কাজের অভিজ্ঞতা থাকতে হবে।
চ. টেকনিক্যাল ইন্‌টার্ন ট্রেংনিং প্রোগ্রাম   (Technical Intern Training Program–TITP): ২০২৪ সালে প্রায় ১৫০০ বাংলাদেশী জাপানি গিয়েছিলেন এই ভিসার আওতায়। তিন বছর হতে পাঁচ বছর পর্যন্ত জাপানে থাকা যায় । জাপানে গিয়ে প্রশিক্ষণ নিয়ে তারপর কাজ করবার সুযোগ পাওয়া যায়।

ছ. বিশেষায়িত দক্ষ কর্মী (Specified Skilled Worker-SSW): বিশেষত দক্ষতা ভিত্তিক খাতে কাজের সুযোগ পাওয়া যায় যেমন কেয়ারগিভার, নির্মাণশিল্প, কৃষি, হোটেল রেস্টুরেন্ট, ফুড সার্ভিস, অটোমোবাইল মেইনটেনেনস, বিমানবন্দর গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং, ইত্যাদি। বাংলাদেশের অনেকেই এই ভিসা নিয়ে জাপান যাচ্ছেন প্রতি বছর। জাপানি ভাষায় N4 বা তারও বেশি দক্ষতার প্রয়োজন হয়।
 জ. অন্ত-কোম্পানী বদলি  (Intra-company transferee): কোনো কোম্পানি জাপানে কাউকে তাদের এমপ্লয়ি হিসেবে ট্রান্সফার করলে এই ধরনের ভিসা দেওয়া হয়। যে দেশ হতে জাপানে বদলী হয়ে আসবেন, সেই দেশের সংশ্লিষ্ট কোম্পানীতে অন্তত এক বছরের কাজ করবার অভিজ্ঞতা থাকতে হবে।

শিক্ষার্থী ভিসা (Student Visa):
যারা জাপানী ভাষা শিখতে চান জাপানে গিয়ে, কিংবা কোন বিষয়ে ডিপ্লোমা, স্নাতক/স্নাতকোত্তর নিতে চান, তাদের জন্য এই ভিসা। কোন একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি নিশ্চিত হওয়ার পর আবেদন করা যায়। একজন শিক্ষার্থীর জন্য প্রতিষ্ঠান সাধারণত সপ্তাহে অনধিক ২৮ ঘন্টা কাজের অনুমতি দিয়ে থাকে।

 বিজনেস ভিসা (Business / Investor Visa): কোন একটি ব্যবসা শুরু করা বা পরিচালনার জন্য যারা জাপানে যেতে চান, তাঁদের জন্য বিজনেস ম্যানেজার ভিসা (Business Manager Visa) আছে।  এই মূল্যবান ভিসা পেলে,  এশিয়ার সর্ব পূর্বের এই ভোক্তাসমৃদ্ধ দেশটিতে ব্যবসা শুরু করা যায়। এই ভিসার জন্য অন্তত ৫০ লাখ ইয়েন (প্রায় ৪৩ লাখ বাংলাদেশী টাকা) এর মূলধন দিয়ে ব্যবসা নিবন্ধন করে আবেদন করা যায়।  ভিসা পাওয়ার আগে ব্যবসার নিবন্ধন করবার ব্যবস্থা আছে। স্বাভাবিকভাবেই, ভিসা পেলে জাপান যাবার পর ব্যবসা শুরু করা যায়।

 ডিপেনডেন্ট ভিসা (Dependent Visa):  পরিবারের সদস্য সাথে নিয়ে কে না থাকতে চাইবেন? বিদেশ-বিভুঁই-এ কার একা একা থাকতে ভালো লাগে? যারা জাপানে বৈধভাবে থাকছেন—পড়াশুনা বা কোন কাজে–তাদের পরিবারের সদস্যরা এই ভিসার জন্য আবেদন করতে পারেন। সাধারণভাবে দেখা যায়, স্বামী/স্ত্রী ও সন্তান এই ভিসা পান। বিয়ে হয়নি যার সাথে এমন কোন লাইফ পার্টনার, ভাই-বোন, মা-বাবা এই ভিসার জন্য আবেদন করতে পারেন না। 

ওয়ার্কিং হলিডে ভিসা (Working Holiday Visa): আপনি ভ্রমণ করতে গিয়েছেন। পাশাপাশি কাজ করতে চান?  আপনার প্রয়োজন ওয়ার্কিং হলিডে ভিসা। বাংলাদেশীরা অবশ্য এই ভিসার আাওতার বাইরে। কেবলমাত্র কিছু নির্দিষ্ট দেশের নাগরিক (যেমন অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড, কানাডা, ফ্রান্স, জার্মানী) এই ধরনের ভিসা পেয়ে থাকেন।

পার্মানেন্ট রেসিডেন্ট ভিসা: যারা দীর্ঘ সময় ধরে জাপানে বসবাস করছেন, তারা এই ক্যাটাগরিতে আবেদন করার যোগ্য। সাধারণত ১০ বছর বা তার বেশি সময় বৈধভাবে বসবাসের পর এই ভিসা পাওয়া যায়।

ম্যারেজ ভিসা (Spouse Visa): অনেকেই এমন ভিসা নিয়ে জাপানে আছেন।  জাপানের নাগরিক কিংবা পার্মানেন্ট রেসিডেন্ট পাওয়া কোন নারী/পুরুষকে বিয়ে করলে,  ম্যারেজ ভিসার জন্য চেষ্টা করা যায়। কেউ যদি জাপান যাবার পর বিয়ের কথা ভাবেন, প্রথমে তাকে টুরিস্ট ভিসা বা অন্য কোন ভিসায় জাপানে যেতে হবে। বিয়ের পর তিনি ম্যারেজ ভিসার জন্য আবেদন করতে পারবেন।   আবার, জাপানে অবস্থানরত স্বামী বা স্ত্রী যদি বিদেশ হতে তার স্ত্রী বা স্বামীকে জাপানে আনতে চান, তবে বিদেশের সেই স্বামী বা স্ত্রীকে অবশ্যই ম্যারেজ ভিসায় আবেদন করতে হবে, কিংবা অন্য কোন ভিসায়—যেমন ওয়ার্ক ভিসায় জাপানে যেতে হবে।

মেডিক্যাল ভিসা (Visa for Medical Stay): চিকিৎসার জন্য মানুষ খোঁজে কোথায় ভালো, নির্ভরযোগ্য সেবা পাওয়া যাবে। প্রযুক্তিতে উন্নত, নরম মনের বিনয়ী মানুষের দেশ জাপান অনেকেরই পছন্দ স্বাস্থ্যসেবার জন্য। রোগী ও স্বজনদের চাহিদা মিটাতে গিয়ে জাপান সরকার জানুয়ারী ২০১১ হতে শুরু করেছে স্বাস্থ্য ভিসার প্রচলন।

প্রযুক্তিতে উন্নত, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে বিধ্বস্ত, আক্রান্ত হবার পর ঘুরে দাঁড়ানো এই দেশটিতে বসবাসের সুবিধা-অসুবিধা দুটোই আছে। সেসব জানা থাকা ভালো—সিদ্ধান্ত নিতে সুবিধা হয়।

জাপানে বসবাসের সুবিধাগুলো হলো:
১ একটি শৃঙ্খলার দেশ জাপান। এখানে নেই মারামারি, সহিংসতা, জাতি-বিদ্বেষ। পকেটে হাজার হাজার টাকা নিয়ে রাস্তাঘাটে ঘোরা যায় নিরাপদে।
২ চাকরি না থাকলে বা চলে গেলে বেকার ভাতা পাওয়া যায়।
৩ এক বছরের পিতৃত্বকালীন ছুটির ব্যবস্থা আছে।
৪ দুষণ খুবই কম—শব্দ দুষণ, বায়ুদুষণ খুবই কম । ভেজালমুক্ত খাবার পাওয়া যায়।
৫ দেশের দক্ষিণের দিকে আবহাওয়া আরামদায়ক, বাংলাদেশের কাছাকাছি রকমের তাপমাত্রা। দেশটির উত্তরের দিকে আবহাওয়া ঠান্ডা।

৬ জাতি হিসেবে শান্তিপ্রিয় তারা। ধর্ম নিয়ে উচ্ছৃংখলতা নেই, বাড়াবাড়ি নেই। সুন্দরভাবে নানা উৎসব পালন করে তারা—বসন্তকালে চেরি ব্লসম, আতশবাজী ইত্যাদি।
৭ পৃথিবীর নিরাপদ দেশুগুলোর একটি। চুরি ছিনতাই নেই বললেই চলে।
৮ তারা জানে কীভাবে সেবা দিতে হয়। ব্যাংকে আন্তরিকতার সাথে কথা বলা হয় কাস্টমারের সাথে। ডাক্তার রোগীকে পুরো অসুখ সম্পর্কে ব্যাখ্যা করে থাকেন।
৯ কনভেনিয়েন্স স্টোর বা ‘কনবিনি’ খোলা থাকে ২৪ ঘন্টায়। মানুষ প্রয়োজনীয় কেনাকাটা করতে পারে সেখান হতে।
১০ বিদেশীদের সাথে বেতনের ব্যাপারে কোন বৈষম্য করা হয় না। একজন জাপানি যে বেতন পান, একই পদের আরেক ব্যক্তির বেতনের সমান।
 
জাপানে বসবাসের অসুবিধাগুলো হলো:

১ নিয়ম কানুনের দেশ জাপান। অনেকেরই কাছে সেটি ’বেশি’। সিস্টেমটা তারা খুব ভালো বুঝে, মানে। বেশি নিয়ম মানতে গিয়ে, ব্যক্তি বিশেষের সুবিধা-অসুবিধা পড়ে যায় চাপা।

২ অন্য দেশ হতে যেই আসুন না কেন, তিনি সব সময়ই ‘বিদেশী’ বলে পরিগণিত হোন। এমনকি, বাবা-মা জাপানী হলেও, ‘বিদেশী’ হিসেবে গণ্য করা হয়।

৩ খাবার দাবার, ফলমূলের দাম অনেক বেশি বাংলাদেশের তুলনায়—প্রায় দ্বিগুণ বা পাঁচ ছয় গুণ বেশি। ইনকাম কম হলে, হিমশিম খেতে হয় নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি কিনতে গিয়ে।
৪ জাপানে যারা কোম্পানীতে চাকরী করেন, তারা মানসিক চাপে থাকেন—যে কাজ দেওয়া হয়, তা নির্ধারিত সময়ের মধ্যে অনেকক্ষেত্রেই শেষ করা যায় না—অভারটাইম কাজ করতে হয়।
৫ বিবাহবার্ষিকী, সন্তানের জন্মদিন, মা-বাবা বিদেশ হতে আসবেন, রিসিভ করতে হবে—এমন ক্ষেত্রে সাধারণত ছুটি পাওয়া কঠিন হয়, যদিও বা ছুটি মেলে, কোম্পানীর ম্যানেজমেন্ট সাধারণত বিষয়টিকে ভালোভাবে নেয় না।
৬ স্বজনের মৃত্যুতে লম্বা ছুটি নিলে, কোম্পানীতে আগের পজিশন আর ফেরত নাও পাওয়া যেতে পারে।

এত এত অসুবিধার পরেও, বলতেই হয় এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে অপার সম্ভাবনার  দেশ জাপান। আপনি জাপানে গিয়ে কী করতে চান—কাজ, পড়াশুনা, বসবাস, বেড়ানো—তার উপর ভিত্তি করে আবেদন করতে হবে সংশ্লিষ্ট ক্যাটাগরীতে। জাপানি ভাষা শেখা, আর তার পাশাপাশি আবেদন প্রক্রিয়া চলুক সমান্তরালে। সফলতা আসবেই। নিপ্পনে আপনার পা পড়বেই। ইনশাআল্লাহ্ সব সম্ভব। সারা পৃথিবী হবে আপনার।

Free Consultation

Please enable JavaScript in your browser to complete this form.